বাবার মরদেহ রেখে পরীক্ষা দেয়া সুমাইয়া পেল জিপিএ ৫

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াপাড়ার কিশোরী বাড়িতে বাবার মরদেহ। কাঁদছেন স্বজনরা। সে ব্যথা নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছিল সুমাইয়া আক্তার সুইটি। হলে বসে পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে পৌঁছেই হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে বলছিল, বাবা আমি পরীক্ষা দিয়ে এসেছি। তুমি চোখ খোলো। ও বাবা।

সেই সুমাইয়া এসএসসিতে পেয়েছে জিপিএ ফাইভ। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াপাড়ার এ কিশোরী কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এ বছর পরীক্ষায় অংশ নেয়। বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার আগের রাতে সুমাইয়ার গাড়িচালক বাবা আবুল কাশেমের মৃত্যু হয়। তিনি তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে যান, যাদের মধ্যে সবার বড় সুমাইয়া।

ছাত্রীর ফলের বিষয়ে কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সুমাইয়া খুবই মেধাবী ছাত্রী। সে স্টুডেন্ট ক্যাবিনেটের প্রতিনিধি। ‘ভালো শিক্ষার্থীর পাশাপাশি একজন ভালো সংগঠক। বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিয়েছিল। তার ফল ভালো হয়েছে। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিস ঘোষ সুমাইয়ার বাবার মৃত্যুর দিন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি যখন জানতে পারি মেয়েটির বাবা মারা গেছেন, বাড়িতে বাবার মরদেহ রেখেই পরীক্ষা দিতে আসছে, তখন হলের শিক্ষকদের বলেছি মেয়েটি যেন নার্ভাস না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে। পরীক্ষা শেষে যেন সুমাইয়াকে বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়। সুমাইয়ার ফলাফলে আমি খুবই আনন্দিত।

ফল পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুমাইয়া বলে, বাবা বেঁচে থাকলে আজ কত খুশি হতো! বাবার স্বপ্ন ছিল আমি যেন শিক্ষক হই। আমি বাবার স্বপ্নপূরণে এগিয়ে যাব। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*